ঢাকা ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাবিকুন্নাহারকে বিয়ের পর থেকে খুবই অশান্তিতে ছিলেন আবু ত্ব-হা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১
  • ১০৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রহস্যজনক নিখোঁজের আট দিন পর গত ১৮ জুন বাড়ি ফিরে এসেছেন আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ব্যক্তিগত কারণে তিনি এত দিন আত্মগোপনে ছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এদিকে আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম দাবি করেছেন, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই খুবই অশান্তিতে ছিল আদনান। তিনি আরো দাবি করেন, তার ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করার বেশ কিছু দিন পর তিনি বিষয়টি জেনেছেন।

অন্যদিকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর আবু ত্ব-হার দ্বিতীয় বিয়ের খবর জেনেছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এমনকি ত্ব-হার স্বজন, প্রথম স্ত্রীর পরিবার আগে থেকে কিছুই জানতে পারেনি।

তার মা আজেদা বেগমও বিয়ের কথা জানেননি তাৎক্ষণিক। পরে একটি মাধ্যমে জানার পর আর কাউকে জানাননি। আজেদা তার ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রীকে খুব একটা যে পছন্দ করেন না- তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন।

ত্ব-হার মা আজেদা বেগম দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিয়ের খবর আমি বেশ কিছুদিন পরে জেনেছি। আমি শুনেছি বিপদে ফেলে আমার ছেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই নারী বিয়ে করেন। খুব মানসিক অত্যাচার করত, তাকে নানাভাবে বিরক্তিকর অবস্থায় রাখত। দ্বিতীয় বিয়ের পর খুবই অশান্তিতে ছিল ত্ব-হা সে কথা তাকে জানিয়েছিল।’

১০ জুন ত্ব-হা ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার কথা দাবি করে প্রথমে গণমাধ্যম ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আনেন তার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া সাবিকুন্নাহার। তার আগে বিষয়টি গোপন রেখেছেন ত্ব-হা নিজেই।

পরে সাবিকুন্নাহার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে তার স্বামীকে উদ্ধারের দাবিও জানান, এই ইস্যুতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন, বেসরকারি টেলিভিশনে কথা বলেন। বিশেষ করে সংবাদ সম্মেলনে তার রাখা আবেগঘন বক্তব্য ‘ত্ব-হাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন, না হলে তার কাছে আমাকে নিয়ে যান’ এ ধরনের আবেগঘন বক্তব্য নিয়ে ব্রিবতকর অবস্থায় পড়েন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

সাবিকুন্নাহারের এমন আবির্ভাব ত্ব-হার স্বজন ও পরিবারের লোকজনকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। পরিবারের অনেকেই এ বিয়ের খবর জানতেন না।

প্রসংগত, সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকার পর গত ১৮ জুন সন্ধান পাওয়া যায় এই আলোচিত বক্তার। পরে তাকে রংপুর নগরের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টারপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু ত্ব-হাকে তার শ্বশুর আজহারুল ইসলাম মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন তার এক প্রতিবেশী।

গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্ব-হা আদনানসহ তার দুই সঙ্গী আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনের। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে তিনি সাভারে যাচ্ছেন বলে তার মাকে জানান। এরপর রাত ২টা ৩৬ মিনিটে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় আদনানের। তিনি সাভার যাচ্ছেন বলেই জানান স্ত্রীকেও। তার পর থেকেই তার ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরদিন বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ত্ব-হার মায়ের জিডির সূত্র ধরে পুলিশ অনুসন্ধান করছিল। আজকে গোপন সূত্রে খবর মেলে আবু তার । ত্ব-হা রংপুর নগরীর আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টারপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আছেন। সেই সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাকে নিয়ে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তার অপর সঙ্গীদেরও সন্ধান পাওয়া যায়।

গাইবান্ধার ত্রিমোহনীতে বন্ধু সিয়ামের বাসায় ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন আবু ত্ব-হা আদনানসহ নিখোঁজ চারজন। বন্ধু বাসায় না থাকলেও তার মায়ের কাছে ছিলেন তারা। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ত্ব-হা আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাবিকুন্নাহারকে বিয়ের পর থেকে খুবই অশান্তিতে ছিলেন আবু ত্ব-হা

আপডেট টাইম : ১০:০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রহস্যজনক নিখোঁজের আট দিন পর গত ১৮ জুন বাড়ি ফিরে এসেছেন আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ব্যক্তিগত কারণে তিনি এত দিন আত্মগোপনে ছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এদিকে আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম দাবি করেছেন, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই খুবই অশান্তিতে ছিল আদনান। তিনি আরো দাবি করেন, তার ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করার বেশ কিছু দিন পর তিনি বিষয়টি জেনেছেন।

অন্যদিকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর আবু ত্ব-হার দ্বিতীয় বিয়ের খবর জেনেছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এমনকি ত্ব-হার স্বজন, প্রথম স্ত্রীর পরিবার আগে থেকে কিছুই জানতে পারেনি।

তার মা আজেদা বেগমও বিয়ের কথা জানেননি তাৎক্ষণিক। পরে একটি মাধ্যমে জানার পর আর কাউকে জানাননি। আজেদা তার ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রীকে খুব একটা যে পছন্দ করেন না- তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন।

ত্ব-হার মা আজেদা বেগম দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিয়ের খবর আমি বেশ কিছুদিন পরে জেনেছি। আমি শুনেছি বিপদে ফেলে আমার ছেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই নারী বিয়ে করেন। খুব মানসিক অত্যাচার করত, তাকে নানাভাবে বিরক্তিকর অবস্থায় রাখত। দ্বিতীয় বিয়ের পর খুবই অশান্তিতে ছিল ত্ব-হা সে কথা তাকে জানিয়েছিল।’

১০ জুন ত্ব-হা ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার কথা দাবি করে প্রথমে গণমাধ্যম ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আনেন তার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া সাবিকুন্নাহার। তার আগে বিষয়টি গোপন রেখেছেন ত্ব-হা নিজেই।

পরে সাবিকুন্নাহার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে তার স্বামীকে উদ্ধারের দাবিও জানান, এই ইস্যুতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন, বেসরকারি টেলিভিশনে কথা বলেন। বিশেষ করে সংবাদ সম্মেলনে তার রাখা আবেগঘন বক্তব্য ‘ত্ব-হাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন, না হলে তার কাছে আমাকে নিয়ে যান’ এ ধরনের আবেগঘন বক্তব্য নিয়ে ব্রিবতকর অবস্থায় পড়েন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

সাবিকুন্নাহারের এমন আবির্ভাব ত্ব-হার স্বজন ও পরিবারের লোকজনকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। পরিবারের অনেকেই এ বিয়ের খবর জানতেন না।

প্রসংগত, সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকার পর গত ১৮ জুন সন্ধান পাওয়া যায় এই আলোচিত বক্তার। পরে তাকে রংপুর নগরের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টারপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু ত্ব-হাকে তার শ্বশুর আজহারুল ইসলাম মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন তার এক প্রতিবেশী।

গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্ব-হা আদনানসহ তার দুই সঙ্গী আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনের। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে তিনি সাভারে যাচ্ছেন বলে তার মাকে জানান। এরপর রাত ২টা ৩৬ মিনিটে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় আদনানের। তিনি সাভার যাচ্ছেন বলেই জানান স্ত্রীকেও। তার পর থেকেই তার ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরদিন বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ত্ব-হার মায়ের জিডির সূত্র ধরে পুলিশ অনুসন্ধান করছিল। আজকে গোপন সূত্রে খবর মেলে আবু তার । ত্ব-হা রংপুর নগরীর আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টারপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আছেন। সেই সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাকে নিয়ে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তার অপর সঙ্গীদেরও সন্ধান পাওয়া যায়।

গাইবান্ধার ত্রিমোহনীতে বন্ধু সিয়ামের বাসায় ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন আবু ত্ব-হা আদনানসহ নিখোঁজ চারজন। বন্ধু বাসায় না থাকলেও তার মায়ের কাছে ছিলেন তারা। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ত্ব-হা আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।